মেহেরপুর প্রতিনিধি। আজ ৬ ই ডিসেম্বর মেহেরপুর মুক্ত দিবস। মেহেরপুর মুক্ত দিবস জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে স্মৃতিসৌধে পুস্প মাল্য অর্পণ ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার সকালে কলেজ মোড়ে অবস্থিত শহীদ স্মৃতি সৌধে জেলা প্রশাসক ডঃ মোহাম্মদ মুনসুর আলম খান জেলা বাসীর পক্ষ থেকে শহীদ স্মৃতিসৌধ পুষ্প মাল্য অর্পণ করেন। এসময় মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করা হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন সরকারি ও বেসরকারি কর্মকর্তা ও বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ উপস্থিত ছিলেন।
দুপুরে মেহেরপুর মুক্ত দিবসে উপলক্ষে মেহেরপুর মুক্তিযোদ্ধার সভাকক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে সদর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ফোরামের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আহমেদের উপস্থাপনায় (ভার্চুয়ালে) প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এমপি। এসময় জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী প্রথমেই সকল মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা ও মাগফিরাত কামনা করে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য রাখেন।
এ সময় আরো উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক ডঃ মোহাম্মদ মুনসুর আলম খান,স্থানীয় সরকার উপ-পরিচালক মুজাহিদুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জহিরুল ইসলাম , সদর উপজেলা নির্বাহি অফিসার আসাদুজ্জামান রিপন, মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন আব্দুল মালেক, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম, মুক্তিযোদ্ধা শহীদ সাদিক হোসেন বাবুল ,মুক্তিযোদ্ধা ইদ্রিস আলী সহ প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ এর ৩ ডিসেম্বর মেহেরপুর শহরের চতুর্দিকে মুক্তিযোদ্ধারা অবস্থান নিয়ে পাক হানাবাহিনীর ক্যাম্পগুলোতে একযোগে হামলার পরিকল্পনা গ্রহণ করে।
৫ ডিসেম্বর কড়ুইগাছি, রাইপুর-শিমুলতলা, কুঞ্জনগর, ঝোড়পাড়া, শহড়াবাড়ি প্রভৃতি গ্রাম থেকে মুক্তিযোদ্ধারা গাংনী বাজারে রওনা হয়ে গোপালনগরে একত্রিত হয়। এরই মধ্যে ভারত স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিলে এক দিকে মুক্তিযোদ্ধাদের মনোবল চাঙ্গা হয়ে ওঠে, অন্যদিকে পাকবাহিনী হয়ে পড়ে ভীতসন্ত্রস্থ। শিকারপুর অ্যাকশন ক্যাম্প থেকে মুক্তিযোদ্ধার দল কাজিপুর-সাহেবনগর হয়ে বামুন্দি পাকসেনা ক্যাম্পসহ বিভিন্ন ক্যাম্পে একযোগে আক্রমন করে। পাকসেনারা মুক্তিযোদ্ধাদের তীব্র আক্রমনে পিছু হটে কুষ্টিয়া রওনা হওয়ার পথে শুকুরকান্দির নিকট তাহাজের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধার একটি দল তাদের উপর পরিকল্পিতভাবে আক্রমন করলে বেশ ক’জন পাকসেনা নিহত হয়। ৬ ডিসেম্বর সকালে ব্রিগেডিয়ার জৈল সিংয়ের নেতৃত্বে মুক্তিবাহিনীর বিশাল বহর মেহেরপুর শহরে প্রবেশ করে। তার আগেই পাকবাহিনীরা লেজ গুটিয়ে চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া হয়ে পালিয়ে যায়। মেহেরপুর হয় হানাদারমুক্ত।